নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ২১ জুন ২০১৮
আবারো চাঙ্গা হয়ে উঠেছে বিশ^মানের বিনোদন কেন্দ্র কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল এমিউজমেন্ট পার্ক এন্ড রিসোর্ট। যেটিকে বেশিরভাগ দর্শনার্থী বসুন্ধরা পার্ক হিসেবে চিনেন। এখন প্রতিদিন হাজারো পর্যটক ভিড় করছে আকর্ষনীয় এ পার্কটিতে। শুধু তাই নয়, ভিন্নমাত্রার এই পার্কে মনের সুখে ঘুরে বেড়াতে ভুল করছেননা স্থানীয়রাও। বিশেষ করে পর্যটন নগরীতে শিশুদের জন্য কোন ধরনের বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় এটির কদর বেড়েছে সবার কাছে। সব মিলিয়ে ভ্রমন পিপাষু মানুষগুলোর জন্য থ্রিডি, সেনেমা প্যালেস ও দেশী-বিদেশী মাছের একুরিয়াম পার্কটিতে নতুন বার্তা বয়ে আনবে বলে আশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকার পাশ^বর্তী ফরিদপুর থেকে আসা পর্যটক দম্পতি বাবুল খন্দকার ও কোহিনুর আক্তার রানু বলেন, যান্ত্রিক জীবন থেকে কিছুটা দুরে ভ্রমনের জায়গা হলো কক্সবাজার। এখানে বিশে^র দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতটি ছাড়া দেখারমতো আর তেমন কিছু নেই। তবে ইন্টারন্যাশনাল এমিউজমেন্ট পার্কটি দেখে মন জুড়িয়ে গেলো। ভাললাগার অনেক কিছু রয়েছে এই পার্কে।
একই মতামত জানিয়েছেন, বেশ কয়েকজন স্থানীয় দর্শনার্থী। তারা বলেন, আন্তর্জাতিকমানের এই বিনোদন পার্ক কক্সবাজারকে বদলে দিবে।
এদিকে নিজ এলাকায় আন্তর্জাতিকমানের একটি পার্ক গড়ে উঠার খবর সত্যি আনন্দদায়ক মন্তব্য করে স্থানীয় দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুচ ভুট্টো জানান, এখানে ঘুরে বেড়ানোর মাধ্যমে শুধু দেশী-বিদেশী পর্যটক নয়, স্থানীয় মানুষগুলোও বাড়ি বিনোদন উপভোগ করতে পারবে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০১১ সালের ৪ জুন দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বিশ^মানের এই পাকর্টি নির্মাণ করেন বিশিষ্ট পর্যটন উদ্যোক্তা এবং চলচিত্র প্রযোজক মরহুম মো. নাজিম উদ্দিন চেয়ারম্যান। পার্কটির যাত্রা শুরুর পর প্রথমে বেশ আলোচনায় চলে আসে। জনপ্রিয়তায় হয়ে উঠে আকাশছোঁয়া। দুর দুরান্ত থেকে দেশী-বিদেশী পর্যটক ছাড়াও স্থানীয় মানুষদের বাড়তি বিনোদনের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে জায়গা করে নেয় ইন্টারন্যাশনাল এমিউজমেন্ট পার্ক। নাজিম উদ্দিন চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর পার্কটি ঝিমিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে পরিবার প্রধানের মৃত্যুর শোক কাটিতে বর্তমানে পার্কের হাল ধরেন মরহুম নাজিম উদ্দিন চেয়ারম্যানের জামাতা নুর উদ্দিন ইমরান। তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
কক্সবাজার শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের পাশে রামু চেইন্দা এলাকায় ১শ’ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হয়েছে এ পার্ক। আন্তর্জাতিকমানের পার্কটি স্থাপনের পর থেকে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের চেহারাই অনেকটা বদলে গেছে বলে মনে করেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
ইতিমধ্যে পার্কে অত্যাধুনিক মুভিং রেস্টুরেন্ট, সুইমিং পুল, ঝরণা ঘর, লেক, ঝরণা ছাতা, বাগান, মিনি চিড়িয়াখানা, আধুনিক জিমনেসিয়াম, মিনি শিশু পার্ক, মৎস্য খামারসহ আরো বেশ কিছু অবকাঠামোর নির্মাণ করা হয়েছে।
দেশে এই প্রথম এ ধরনের বিশাল এলাকাজুড়ে স্থাপিত হয়েছে আন্তর্জাতিকমানের এই পার্ক। পার্কটি দেশের প্রধান পর্যটন স্পট কক্সবাজারে ভ্রমণে আসা লোকজনের জন্য বাড়তি বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা রেখে এসেছে।
কক্সবাজার ইনটারন্যাশনাল এমিউজমেন্ট পার্ক এন্ড রিসোর্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরুণ উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী নুর উদ্দিন ইমরান জানান, কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে বিনিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে আন্তর্জাতিকমানের প্রথম এমিউজমেন্ট পার্ক নির্মান করেছিলেন আমার শাশুড় মরহুম নাজিম উদ্দিন চেয়ারম্যান। তিনি এ পার্ক নিয়ে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষনে ভিন্ন কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সে লক্ষ্যে ব্যতিক্রমী সব নতুনত্ব নিয়ে বিনোদন পার্কটি শুরুর কয়েক বছর পর আমার শাশুড় মৃত্যু বরণ করলে পার্কের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে। এর দীর্ঘসময় পর আবারো মরহুম শাশুড়ের স্বপ্নকে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করার জন্য নতুনভাবে হাল ধরেছি। এখন সকলের আন্তরিক সহযোগিতা পেলে এই বিনোদন পার্কে নতুন কিছু করে দেখানো সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করে পার্ক কতৃপক্ষ।
Posted ১:০৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২১ জুন ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh