মঙ্গলবার ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

চাঞ্চল্যকর জাল দলিল মামলার অভিযোগ পত্র থেকে মূল হোতা ছাত্তার বাদ

দেশবিদেশ রিপোর্ট   |   বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

চাঞ্চল্যকর জাল দলিল মামলার অভিযোগ পত্র থেকে মূল হোতা ছাত্তার বাদ

কক্সবাজারে জাল দলিল চক্রের একটি চাঞ্চল্যকর মামলার মূল হোতা উমেদার আবদুস সাত্তারকে মামলার অভিযোগ পত্র থেকে বাদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ দীর্ঘ ১১ মাস ধরে তদন্তের পর এজাহারভুক্ত ওই আসামীকে অভিযোগ পত্র থেকে বাদ দেয়ায় নানা কথা উঠেছে। গত ডিসেম্বর মাসে গোপনে পুলিশ কর্মকর্তা চাঞ্চল্যকর জালিয়াত মামলাটির অভিযোগ পত্র আদালতে দাখিল করেন। এরপর পরই সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্র আবারো জালিয়াতির কাজে হামলে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রেল প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা অবৈধ পথে হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে জালিয়াত চক্রটি ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সীল-স্বাক্ষর এবং পরিষদের প্যাড ব্যবহার করে জাল দলিল সহ অন্যান্য দলিল-দস্তাবেজ সৃজন করছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে, কক্সবাজার সদর ভুমি অফিসে দীর্ঘদিন ধরে উমেদার হিসাবে কর্মরত ছিলেন ঝিলংজা হাজী পাড়ার মৃত জামাল হোছনের পুত্র আবদুস ছাত্তার (৩৩)। সরকারি ভুমি অফিসে উমেদারীর পদ নিয়ে আবদুস ছাত্তার ঝিলংজার রেলপথ প্রকল্পের জমির দাগ-খতিয়ান বের করে গোপনে জালিয়াত চক্রের সাথে হাত করে জাল দলিল সৃজন করতে শুরু করে। কক্সবাজারের বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন ভুমি অফিসের একজন উমেদার জালিয়াতি চক্রের সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়েছিলেন। একারনে জেলা প্রশাসক তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে পুলিশকেও তাগিদ দিয়েছিলেন বার বার। কিন্তু সেই পুলিশই উমেদার ছাত্তারকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দিয়েছেন।
এজাহারভুক্ত চাঞ্চল্যকর একটি মামলার মূল হোতাকে বাদ দেয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে চরম অসাধুতার। বলা হচ্ছে যার নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে জাল দলিল ও সীল তৈরির মাধ্যমে রেল প্রকল্প সহ আরো হরেক প্রকল্পের অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলনের পাঁয়তারা করা হচ্ছে তাকেই বাদ দেয়া হয়েছে মামলার অভিযোগ থেকে। এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলার বাদী টিপু সোলতান অভিযোগ পত্র থেকে মূল হোতাকে বাদ দেয়ায় ম্যাজিষ্ট্রেট স্বপন কুমার ভৌমিকের আদালতে লিখিত আপত্তি দাখিল করে মামলার পূণঃ তদন্ত দাবি করেছেন।
মামলার বাদী একজন জনপ্রিয় তৃণমূলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। মামলাটিতে তিনি বাদী হয়েছেন, রেল প্রকল্পের মত দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রকল্পের সরকারি টাকা লোপাট থেকে রক্ষার জন্য। যাতে জালিয়াত চক্রকে আইনের আওতায় আনা সম্বভব হয়। কিন্তু পুলিশের তদন্তকারি কর্মকর্তা এক্ষেত্রে মস্তবড় অন্যায়ের পথে পা বাড়িয়ে জালিয়াত চক্রের হাত থেকে অবৈধ সুযোগ নিয়ে অভিযোগ পত্র থেকে বাদ দিয়ে জালিয়াত চক্রকেইে শক্তিশালী করার সুযোগ দিলেন বলে অভিযোগ তুলেন চেয়ারম্যান টিপু সোলতান।
জাল দলিল সৃজনের মামলার অভিযোগ থেকে বাদ যাওয়া সংঘবদ্ধ দলের নেতার নাম আবদুস সাত্তার (৩৩)। কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা হাজী পাড়ার বাসিন্দা আবদুস সাত্তার কক্সবাজার সদর ভুমি অফিসের একজন ওমেদার (নির্ধারিত বেতন ছাড়া কর্মচারি) হিসাবে দীর্ঘকাল ধরে কাজ করে আসছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, ভুমি অফিসের কর্মচারি হবার সুযোগে তিনি গোপনে লোকজনের জায়গা-জমির তথ্য বের করে দিয়ে সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্রের সাথে মিলে জাল দলিল সৃজনে লিপ্ত রয়েছেন।
গেল বছরের ১৬ জানুয়ারি সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্র কক্সবাজার সদর উপজেলা অফিস গেইট এলাকায় জাল দলিল সৃজনের সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গন্যমান্য ব্যক্তিগন অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল দলিল, সিল মোহর, ওয়ারিশ সনদ পত্র সহ প্রায় তিন বস্তা নানা আলামত জব্দ করেন। ঘটনাস্থল থেকে জালিয়াত চক্রের তিনজনকে আটক করা হয়। আটক হওয়া তিনজন হচ্ছেন যথাক্রমে কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নের দক্ষিন নয়াপাড়ার তৌহিদুল ইসলাম, একই এলাকার নুরুল আবছার এবং ঝিলংজা চান্দের পাড়ার সৈয়দুল হক।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান টিপু সোলতান বাদী হয়ে আমিন উল্লাহ ও ভুমি অফিসের ওমেদার আবদুস সাত্তার সহ আরো ৭/৮ জন জালিয়াত চক্রের অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রথম তদন্তকারি কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক দেবব্রত রায় গেল বছরের ১৭ জানুয়ারি আদালতে প্রেরিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন যে, মামলার আসামীরা সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্রের সদস্য। তারা পরষ্পর যোগসাজসে কক্সবাজার রেল লাইনের অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলন করার জন্য জাল দলিল সৃজনে লিপ্ত।
পরবর্তীতে স্বপন কুমার ভৌমিক নামের একই থানার অপর একজন উপ পরিদর্শক মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা নিয়োজিত হয়ে মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্তকারি এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার বাদী ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান টিপু সোলতান অভিযোগ করেছেন যে, কোন তদন্ত না করেই অসাধূতার আশ্রয় নিয়ে জালিয়াত চক্রের মূল হোতা আবদুস ছাত্তারকে মামলার অভিযোগ পত্র থেকে বাদ দিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সোলতান বলেন-‘ তদন্তকারি কর্মকর্তা স্বপন কুমার ভৌমিক আমার সাথেও কোন কথা পর্যন্ত বলেননি।’ বাদী গতকাল মঙ্গলবার এ ব্যাপারে আদালতে অভিযোগ পত্রের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন জমা দিয়ে পূণরায় তদন্ত দাবী করেছেন। তবে আবদুস সাত্তার দাবী করেছেন তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ।

Comments

comments

Posted ১:৩৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com