নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯
এমপি নির্বাচিত হওয়া মাত্র আড়াই মাস না যেতেই চকরিয়ার রাজনীতিতে বড়ই ধাক্কা খেলেন চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ জাফর আলম। তিনি ইসি ঘোষিত নির্বাচন আচরণ বিধিকে তোয়াক্কা না করে কোমর বেধে নেমেও তাঁর পছন্দের প্রার্থী, আওয়ামী লীগ তথা নৌকা প্রতীকের চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীকে জেতাতে পারেননি। জাফর আলম হেরে গেলেন দলের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ক্রীড়া সংগঠক ফজলুল করিম সাঈদীর কাছে। গতকাল ১৮ মার্চ কম ভোটার উপস্থিতির নির্বাচনে আনারসের ভারে নৌকা ডুবেছে জঘন্যভাবে। ঘোষিত ৯৮টি কেন্দ্রে ফজলুল করিম সাঈদী আনারস প্রতীক নিয়ে যেখানে পেয়েছেন ৫৭ হাজারেরও বেশী ভোট, সেখানে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৯ হাজার ভোট। ব্যবধান প্রায় ২৮ হাজার ভোটের।
এদিকে চকরিয়ার রাজনীতির মাঠে বরাবরই জাফর বিদ্বেষী নামে খ্যাত ফজলুল করিম সাঈদীর এই সাড়া জাগানিয়া বিজয়ে হারেননি প্রতিদ্বন্ধি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। পক্ষান্তরে হেরেছেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্য আলহাজ¦ জাফর আলম। কেননা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চকরিয়া উপজেলায় নৌকা প্রতীকটি বরাদ্দ দেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীকে। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে এমপি জাফর আলমের আনুকূল্য পেয়ে নৌকার টিকিট কনফার্ম করেন গিয়াস উদ্দিন। এরপর ঘরের আগুনে উত্তপ্ত চকরিয়ার রাজনীতির মাঠে তুমুল প্রচরণায় বাকযুদ্ধে নামেন এমপি জাফর বনাম ফজলুল করিম সাঈদী। কক্সবাজার জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন (ডি.এফ.এ) এর সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদী অনেকটা ফুটবল মাঠের স্ট্রাইকারের মতই ব্যক্তিগত ক্যারিশমার সাথে নৌকা এন্ট্রি ভোটকে পুঁজি করে নির্বাচনের কঠিন লড়াইয়ে সহজে জিতলেন।
প্রবল প্রতিপক্ষকে ভোট যুদ্ধে পরাস্ত করে চকরিয়া উপজেলা পরিষদের ৫ম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ফজলুল করিম সাঈদী। ডুলাহাজারার এক সাধারণ ভোটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সারাদেশের মতই চকরিয়ার মানুষ বিগত ৩০ ডিসেম্বর পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেননি। প্রশাসনের সহায়তায় ভোট হয়েছিল ২৯ ডিসেম্বর, অর্থাৎ আগের রাতেই। কিন্তু গতকাল প্রশাসন নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করায় সাঈদীর বিজয় সহজ হয়েছে। যারাই কেন্দ্রে গেছেন তারাই জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে না পারার আক্ষেপ থেকে আনারস প্রতীককে বেছে নিয়েছেন।
খুটাখালীর ভোটার আবুল কালাম জানান, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চকরিয়ায় শতকরা হিসাবে ৯০ এর অধিক ভোট কাস্ট দেখানো হয়েছিল। কিন্তু আড়াই মাস না যেতেই এত ভোটার গেলো কোথায়? গতকাল উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে রেকর্ড কম ভোট কাস্ট হয়েছে। যা চকরিয়ার রাজনীতিবিদদের লজ্জা দেয়ার শামিল। আরেক ভোটার চকরিয়ার শওকত জানান, এমপি জাফর চকরিয়া আওয়ামী লীগ পরিবারের সবার নেতা। বিগত নির্বাচনে তিনি জয়ী হতে ফজলুল করিম সাঈদী অকৃপণ সহযোগিতা করেছেন। রাজনীতির মুরব্বি হিসেবে জাফর ভাই নিরপেক্ষ থাকলে এবং সাঈদীর বিরুদ্ধে কম কথা বললে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর এ দশা হত না। সাহারবিল ইউনিয়নের ভোটার আব্দুর রহিম জানান, ব্যক্তি হিেেসবে গিয়াস চৌধুরী খারাপ না, কিন্তু নৌকা প্রতীক প্রাপ্তিই ওনার পরজয়ের কারণ হলো। সাঈদী নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলে তাঁরও একই দশা হতো। এখন অল্প সময়ে এমপি জাফরের আম-চালা দুটোই গেলো।
Posted ১২:৩৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯
dbncox.com | ajker deshbidesh