দেশবিদেশ রিপোর্ট | বুধবার, ২০ জুন ২০১৮
কুতুবদিয়া থানার সাবেক ওসি আলতাফ হোসেনকে গতকাল মঙ্গলবার একটি ঘুষের মামলায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কক্সবাজারের সিনিয়র ষ্পেশাল জজ এবং জেলা ও দায়রা জজ মীর শফিকুল আলমের আদালতে ওসি আতœসমর্পন পুর্বক জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। বিজ্ঞ বিচারক ঘুষের মামলার পলাতক আসামী ওসি আলতাফকে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়ে জামিনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন আগামী ২৬ জুন। ওসি আলতাফ হোসেন বর্তমানে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হিসাবে রয়েছেন।
২০১৪ সালে কুতুবদিয়া থানায় ওসি হিসাবে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে ওসি আলতাফ হোসেন ও থানার উপ পরিদর্শক এবিএম কামাল উদ্দিন একটি হত্যা মামলা দায়েরে ঘুষ নিয়েছিলেন। এতকাল পর সেই ঘুষের মামলার বাদীকে নিয়ে কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরীর মধ্যস্থতায় আপোষ মীমাংসা করেন বলে পলাতক আসামী ওসি আলতাফ তার জামিনের আবেদনে উল্লেখও করেছেন। এমনকি ওসি তার আবেদনে আরো বলেছেন, বাদীনী তার সাথে আপোষ করে নোটারি পাবলিকের কাছে হলফনামাও দিয়েছেন এবং তিনি আদালতেও উপস্থিত রয়েছেন। অপরদিকে মামলার বাদিনীও পৃথক আবেদনে কথিত আপোষের কথা বলে আবেদন করেছেন। ওসি ঘুষ নেয়ার মত দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের একটি জঘন্য মামলায় দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গতকাল আতœসমর্পন করেন।
তবে ওসির সহযোগি আসামী কুতুবদিয়া থানার সাবেক উপ পরিদর্শক এবিএম কামাল উদ্দিন এখনো পর্যন্ত পলাতক রয়েছেন। আদালতএকটি হত্যা মামলা নিতে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে দায়ের করা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের মামলায় সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুলিশ পরিদর্শক আলতাফ হোসেনকে কক্সবাজারের কারাগারে পাঠিয়েছেন। কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থানায় ওসি হিসাবে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে পুলিশ পরিদর্শক আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ২০ জুলাই সিনিয়র ষ্পেশাল জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।
কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের ছিন্নি খাইয়ার পাড়া নামক এলাকার বাসিন্দা ইস্কান্দার মির্জার স্ত্রী জমিলা আকতার ওসি’র বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের মামলাটি দায়ের করেছিলেন। কুতুবদিয়া উপজেলা তহশীল অফিসে এমএলএসএস হিসাবে কর্মরত ফরিদুল আলম নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে থানায় মামলা দায়েরের ঘটনা নিয়ে ঘুষের মামলাটির উদ্ভব হয়। জমিলা আকতার নামের ওই গৃহবধূর অভিযোগ হচ্ছে ২০১৪ সালের ১৯ জুন নিজ ঘরে ফরিদুল আলমের লাশ পাওয়া যায়। ভিকটিম ফরিদুল আলম সর্ম্পকে জমিলা আকতারের ভাসুর। এদিন রাতে জমিলা আকতার ও তার শ্বাশুড়ি থানায় যান হত্যা মামলা দায়ের করতে। তখন থানার কর্মরত ওসি আলতাফ হোসেন ও থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক এবিএম কামাল উদ্দিন তাদের নিকট মামলা রুজুর জন্য এক লাখ টাকা দাবি করেন।
এমনকি নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে মামলা রুজুর আশ্বাসও প্রদান করেন। পরবর্তীতে তাদের পারিবারিক প্রতিপক্ষের নিকট থেকে আরো বেশী অংকের টাকার ঘুষ নিয়ে উল্টো অভিযোগকারীদের আসামী করে মামলা গ্রহণ করেন। এমন অভিযোগ এনে আদালতে পুলিশ কর্মকর্তাদ্বয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা নালিশী মামলার অভিযোগ তদন্তের জন্য কক্সবাজারের সিনিয়র ষ্পেশাল জজের আদালত দুর্নীতি দমন (দুদক) কমিশনে প্রেরণ করেন। দুদক কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি সরেজমিন তদন্ত করে সাক্ষ্য প্রমাণ নিয়ে ঘুষ (এরপর পৃষ্ঠা-২ঃ কলাম- ৩ )
ওসি আলতাফ কারাগারে
গ্রহণের অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে আদালতকে অবহিত করে। এরপর কক্সবাজারের সিনিয়র ষ্পেশাল জজের আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদ্বয়কে সমন দেন আদালতে হাজির হতে। গতকাল কুতুবদিয়া থানার সাবেক ওসি এবং বর্তমানে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি আলতাফ হোসেন কক্সবাজারের আদালতে জামিনের প্রার্থনা জানিয়ে হাজির হন। কক্সবাজারের সিনিয়র ষ্পেশাল জজ ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মীর শফিকুল আলম ওসি আলতাফ হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়ে আগামী ২৬ জুন জামিনের আবেদনটি শুনানীর জন্য দিন ধার্য রেখেছেন। অপর আসামী উপ পরিদর্শক এবিএম কামাল উদ্দিন পলাতক রয়েছেন।
Posted ১:৪০ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২০ জুন ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh