নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯
কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুলের রুহুল্লার ডেইল এলাকায় পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। গত তিন বছর ধরে প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে আসছে একটি চক্র। বেশ কয়েকটি ডাম্পার দিয়ে দৈনিক ৩০ গাড়ীর উপরে মাটি বিভিন্ন জায়গায় পাচার করা হচ্ছে। যার কারনে খুরুশকুল মডেল হাই স্কুল সড়ক দেবে যাওয়ার পাশাপাশি অনেক অংশে ভেঙ্গে গেছে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ স্থানিয়দের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের পিএমখালী রেঞ্জের আওতাধীন খুরুশকুল বনবিটের রুহুল্লার ডেইল এলাকার মডেল হাই স্কুলের পুর্বপাশে বিশাল পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে আসছে কুলিয়া পাড়ার দেলোয়ার, বশির, আবদুল জলিল সহ কয়েকজনের একটি চক্র। কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার কামাল, টেকপাড়ার নাছির উদ্দিন রুনু, রামুর আবদুল জলিলের মালিকানাধীন ৬টি ডাম্পার গাড়ীতে করে প্রতিদিন এসব মাটি বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছে। প্রায় ৩ বছর ধরে পাহাড় কেটে বনভুমি সমতল ভুমিতে পরিণত করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। যার কারণে পাহাড় কাটাও থামছে না।
খুরুশকুল মডেল হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, মাটি ভর্তি ডাম্পার গাড়ীর কারনে সড়কের দুই পাশে দেবে গেছে এবং বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ায় হাটাচলা কষ্টসাধ্য। বর্তমানে একের পর এক ডাম্পার চলাচলের কারনে ধুলাবালীতে এ সড়ক দিয়ে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
খুরুশকুল মডেল হাই স্কুলের শিক্ষকরা জানান, মাটি ভর্তি গাড়ী চলাচলের কারনে ধুলাবালিতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সরু সড়কটি দিয়ে মাটি ভর্তি গাড়ী চলাচলের কারনে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে নেমে দাড়িয়ে থাকতে হয়। এছাড়াও ধুলাবালির কারনে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, খুরুশকুলের রহুল্লার ডেইল এলাকার মডেল হাই স্কুলের পূর্বপাশে কুলিয়া পাড়ার দেলোয়ার, বশির, আবদুল জলিল সহ কয়েকজনের একটি চক্র পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে বীরদর্পে। গ্রামীন সরু সড়ক দিয়ে মাটি ভর্তি ডাম্পার চলাচলের করনে হাটাচলার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ সড়ক দিয়ে বর্ষায় যেমন হাটা যায়না তেমনি বর্তমানে শীত মৌসুমে ধুলাবালীর কারনে হাটাচলায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে।
মাটি কেটে বিক্রি করার সত্যতা স্বীকার করে অভিযোক্ত মো. দেলোয়ার, বশির, রুবেল জানান, পাহাড়ের পার্শবর্তী তাদের নিস্ব জমি থেকে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার কামাল, টেকপাড়ার নাছির উদ্দিন রুনু, রামুর আবদুল জলিল গাড়ী প্রতি ৫০ টাকা করে এসব মাটি তাদের মালিকানাধীন ডাম্পার গাড়ীতে করে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছে। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার সময় ধুলাবালীতে ভোগান্তি পোহানোর সত্যতা স্বীকার করে জানান, ভেঙ্গে যাওয়া সড়কটি মেরামত করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
স্থানিয় ইউপি সদস্য মাখন চন্দ্র দে পাহাড় কেটে সমতল ভুমিতে পরিণত করে মাটি বিক্রি করার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মাটি ভর্তি ডাম্পার গাড়ী চলাচলের কারনে গ্রামিন এ সড়কটি হাটাচলার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। একদিকে পাহাড় নিধন করা হচ্ছে অপরদিকে সড়কের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, খুরুশকুলে পাহাড় কাটার ঘটনা সরেজমিন তদন্ত করে
দেখা হবে। পাহাড় কাটার প্রমানসাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশরাফ জানান, খুরুশকুল সহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সরেজমিন তদন্ত সহ অভিযান চালিয়ে পরিবেশ বিরোধী সকল কর্মকান্ড বন্ধ করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এছাড়াও ডেইলপাড়া, আদর্শগ্রাম, তেতৈয়া, ঘোনাপাড়া, নতুন ঘোনারপাড়া, ফকিরের দোকান এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় নির্বিচারে পাহাড় কাটা হচ্ছে বলে দাবী করে স্থানীয়দের দাবী, দ্রুত সময়ের মধ্যে পাহাড় কাটা, মাটি ভর্তি গাড়ী চলাচল বন্ধ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার।
Posted ২:০২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯
dbncox.com | ajker deshbidesh