রফিক উদ্দিন বাবুল, উখিয়া | মঙ্গলবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
উখিয়া-টেকনাফে ৩০টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের আনাচে কানাচে গড়ে ওঠেছে ৭ শতাধিক হাট-বাজার। এসব বাজারে মিলছে অহরহ বিক্রি হচ্ছে এনজিও প্রদত্ত ত্রানের পণ্য সামগ্রী। ত্রানের মালামাল বিক্রির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের হাতে কড়ি। পরে লাখ লাখ টাকার মালিক বনে যাওয়া এসব রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিশেষ করে যুবক শ্রেণির যারা রয়েছে তারাই মুলত মালোশিয়ার উদ্দেশ্যে ক্যাম্প ত্যাগ করছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
কুতুপালং রেজিষ্ট্রাড ক্যাম্পের চেয়ারম্যান রশিদ আহম্মদ জানায় তারা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে ১৯৯২ সনে। ২০০৪ সালে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর প্রায় ২২ হাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আটকা পরে যায়। এসব রোহিঙ্গারা খেয়ে না খেয়ে এখনও পর্যন্ত ক্যাম্পে মাটি কামড়ে ধরে একদিন না একদিন স্বদেশে ফিরে যাওয়ার প্রহর গুনছে। তিনি বলেন ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্টের পর যেসব রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে এদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের সিংহভাগ রোহিঙ্গা চিহ্নমূল ও হত দরিদ্র। তারা বর্তমানে ত্রানের মালামাল বিক্রি করে ও ইয়াবা লেনদেনের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবার প্রয়োজনীয় সংখ্যক টাকার মালিক বনে গেছে। যে কারনে মালোশিয়া যাবার জন্য এসব ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা মরিয়া হয়ে ওঠেছে।
টেকনাফ বিজিবি উখিয়া থানা, রেজু বিজিবি ও মহেশখালী বিজিবি কর্তৃক উদ্ধার করা প্রায় ৫শতাধিক রোহিঙ্গা যুবক, নারী, পুুরুষ, শিশু কুতুপালং বালুখালি ও টেকনাফ উংচিপ্রাং ক্যাম্পের বাসিন্দা বলে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির সূত্রে জানা গেছে। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আবুল খায়ের বলেছেন, প্রতিদিন শত শত
রোহিঙ্গাদের খাওয়ানোর সামর্থ তাদের নেই। তাই তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহযোগীতা চেয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নিকারুজ্জামান রোহিঙ্গাদের খাওয়ার জন্য ৩টন চাল দেওয়ার আশ্বস্ত করেছেন। এতে প্রতিয়মান হয় প্রতিদিন কোন না কোনভাবে শত শত রোহিঙ্গা মালোশিয়ার উদ্দেশ্যে ক্যাম্প ছাড়ছে।
কুতুপালং বস্তি ম্যানেজমেন্ট কমিটির সেক্রেটারী মো: নুর দাবি করেন তারা ২০১২ সালে এখানে এসেছেন, এ পর্যন্ত থাকার ঘরটি ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে পারেনি। অথচ মাত্র ১৮ মাস আগে আসা রোহিঙ্গা উন্নত জীবনের আশা করে মালোশিয়াসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ভাড়া বাসা নিয়ে আরাম আয়েশে দিন কাটাচ্ছে। ঐ রোহিঙ্গা নেতা ক্যাম্পে গড়ে ওঠা অবৈধ বাজারগুলো বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় এসব রোহিঙ্গাদের ঠেকানো পুলিশের পক্ষে সম্ভব হবে না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমিটি যগ্ন আহ্ববায়ক পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন এনজিও গুলো কোন প্রকার সম্বনয় ব্যতি রেখে তাদের ইচ্ছামত ত্রান সামগ্রী ও নগদ টাকা বিতরনসহ রোহিঙ্গাদের চাকুরি দেওয়ার কারনে শতকরা ৮০ পরিবার এখন স্বচ্ছল হয়ে ওঠেছে। প্রতিমাসে ৪/৫ বার ত্রান নগদ টাকা পাওয়ার কারনে হাজার হাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোটিপতি বনে গেছে। তারা বিভিন্ন মালামালের দোকান দিয়ে বসেছে। এখানে স্বর্ণের দোকান থেকে শুরু করে মোবাইল, ইলেক্ট্রনিক্স পার্সের দোকান দিয়ে দৈনিক লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে। তাই তারা ক্যাম্পে স্থায়ী বসবাস মোটেই পছন্দ করছে না বিধায় ক্যাম্প পালানোর ঘটনা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, খাস জমি হওয়ার কারনে ক্যাম্পের বাজারগুলো ফেরি ফেরির আওতায় আনা যাচ্ছে না। তবে এসব হাট বাজারগুলো সরকারিবাবে নিয়ন্ত্রনে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
Posted ১:৩৫ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
dbncox.com | ajker deshbidesh