শনিবার ১লা এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

‘কৃষিখাত যান্ত্রিকীকরণে কমবে দারিদ্র, আসবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা’

দেশবিদেশ অনলাইন ডেস্ক   |   শনিবার, ২৮ জুলাই ২০১৮

‘কৃষিখাত যান্ত্রিকীকরণে কমবে দারিদ্র, আসবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা’

স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭২ সালের তুলনায় বর্তমানে খাদ্য শস্যের উৎপাদন প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি বছর উৎপাদিত হচ্ছে ৩৮ মিলিয়ন মেট্রিক টনেরও বেশি খাদ্য শস্য। গবেষণায় দেখা গেছে বার্ষিক ৪ থেকে ৪.৫ শতাংশ হারে কৃষি প্রবৃদ্ধি হলে এ খাত থেকে রপ্তানি আয় করাও সম্ভব। এ ছাড়া কৃষি খাতে কর্মী প্রতি জিডিপি ১ শতাংশ বৃদ্ধি করা গেলে দারিদ্র কমবে ০.৩৯ শতাংশ।

আজ শনিবার কৃষিবিদ মিলনায়তনে মেটাল গ্রুপ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ: বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ ও আর্থিক সেবা খাতের ভূমিকা’- শীর্ষক সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. আতিউর রহমান। সেমিনারে বাংলাদেশের কৃষিখাতের বর্তমান চিত্র তুলে ধরা হয়। গুরুত্বারোপ করা হয় কৃষকদের ঋণ প্রাপ্তির বিষয়ে, যেন তারা কৃষি কাজে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার করতে পারে।

সেমিনারে ড. আতিউর রহমান জানান, বাংলাদেশ সরকার কৃষির যান্ত্রিকীকরণের লক্ষ্যে প্রান্তিক ও দরিদ্র কৃষকদের যন্ত্র ক্রয়ে ভর্তুকি প্রদান করছে। বেসরকারি খাতকে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ভূমিকা রাখার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদানের জন্য কৃষিযন্ত্র আমদানির ক্ষেত্রে রয়েছে বিশেষ শুল্ক সুবিধা। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচিতে কৃষি যন্ত্রপাতি খাতে ঋণ প্রদানকে বিশেষভাবে
উৎসাহিত করা হয়েছে। তিনি বিভিন্ন ব্যাংক ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে অনুরোধ করেছেন কৃষকদের জন্য বিশেষ ঋণের ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য, যেন তারা কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে পারে। তার মতে, এমনটি করা সম্ভব হলে সেটি হবে ‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ’- এর একটি আদর্শ দৃষ্টান্ত। আর সব খাতের মতো দেশের কৃষি খাতের বিকাশ এবং কৃষির যান্ত্রিকীকরণেও বেসরকারি খাতকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে, আর এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর গুরুত্ব নিঃসন্দেহে অপরিসীম। আগামীতে ব্যাংকিং খাত কিভাবে কৃষির যান্ত্রিকীকরণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে- তা নিয়ে কয়েকটি প্রস্তাবনা এখানে দেয়া যেতে পারে-

 বাংলাদেশ ব্যাংকের যে কোন ধরণের রিফাইনান্স স্কিমের আওতায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ৫ শতাংশ সুদে (ব্যাংক রেট) ঋণ নিয়ে তা ৯ শতাংশ সুদে বিতরণ করে থাকে। কৃষি যন্ত্রাংশের জন্য যদি ব্যাংক রেট ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ করা যায় তাহলে কৃষি যন্ত্রাংশের জন্য ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিশেষ উৎসাহিত হবে এবং আরও কম সুদে কৃষকদের ঋণ দিতে পারবে।

 বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন নীতিমালা ও কর্মসূচিতে মোট সরবরাহকৃত ঋণের অন্তত ১০ শতাংশ মৎস্য চাষে দেয়ার নির্দেশনা এসেছে। একই রকম একটি নির্দেশনা যদি কৃষি যন্ত্রাংশ ক্রয়ের জন্য থাকে তবে তা কৃষির যান্ত্রিকীকরণে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।

 কয়েক বছর আগে মসলা চাষ উৎসাহিত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ৬ শতাংশ সুদে ভর্তুকিসহ মাত্র ৪ শতাংশ হারে মসলা চাষিদের ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ফলে দেশের মসলা চাষে বিপ্লব ঘটে গিয়েছিল- এক দিকে মসলা চাষিরা লাভবান হয়েছেন, অন্য দিকে মসলা আমদানিও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। একই ধারায় গাভী খামারিদের জন্যও স্বল্প সুদে ঋুণের ব্যবস্থা করা হয়। এই ধারাবাহিকতায় যদি কৃষি যন্ত্রাংশের জন্যও সুদে ভর্তুকির কর্মসূচি নেয়া যায়, তা কৃষির যান্ত্রিকীকরণে বিশেষ সহায়ক হবে।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর এমিরেটাস ড. আব্দুস সাত্তার মন্ডল-সহ বাংলাদেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা। এছাড়া ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক, রাষ্ট্রায়াত্ত, বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের প্রতিনিধিসহ দেশি ও বিদেশি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানের এবং বাংলাদেশে কর্মরত কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিবৃন্দ। ছিলেন মেটালের গ্রুপ সিইও এএমএম ফরহাদসহ গণমাধ্যম কর্মীরা। সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন হেলাল আহমেদ চৌধুরী, সুপার নিউমেরারি প্রফেসর, বিআইবিএম এবং সাবেক ব্যাবস্থাপনা পরিচালক, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড;
অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তার মন্ডল, সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়; হিদেয়েকি কজিমা, ব্যাবস্থাপনা পরিচালক এমইউএফজি ব্যাংক লিমিটেড; অধ্যাপক হান্নানা বেগম, সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ; ড. মো, হাবিবুর রহমান, জেনারেল ম্যানেজার, গভর্নর সেক্রেটারিয়েট, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষক প্রতিনিধিরা।

দেশবিদেশ /২৮ জুলাই ২০১৮/নেছার

Comments

comments

Posted ৮:৪০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৮ জুলাই ২০১৮

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com