শহীদুল্লাহ্ কায়সার | শনিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান হলো। হলো দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান। রাজগৃহ ছেড়ে রাজনীতির মাঠে পদার্পণকারী কানিজ ফাতেমা আহমেদই হচ্ছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য। বিষয়টি এখন নিশ্চিত। গতকাল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বর্তমান জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্টতা থাকায় তাঁর সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হতে আর কোন বাধা রইলো না। তাঁর নামের সঙ্গে সংসদ-সদস্য পদ যুক্ত হওয়া এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। গতকাল রাতে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে কানিজ ফাতেমা আহমেদ নিজেও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কক্সবাজার জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হলেও কানিজ ফাতেমা আহমেদ জেলার মানুষের কাছে সাবেক সংসদ-সদস্য জেলার সর্বজনশ্রদ্ধেয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরীর সহধর্মিনী হিসেবে অধিক পরিচিত। এক সময় গৃহবধূ হিসেবে জীবন যাপন করলেও ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। কক্সবাজার জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবেই রাজনীতিতে পদার্পণ করেন তিনি। এরআগে ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় মহিলা সংস্থা কক্সবাজারের চেয়ারম্যান মনোনীত হন। পরে যুক্ত হন নারীবান্ধব বিভিন্ন সামাজিক কর্মকা-ে।
জীবনী
ব্যক্তি জীবনে সদাচারিনী কানিজ ফাতেমা আহমেদ ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম শহরের (বর্তমানে মহানগর) চাঁন্দগাঁও এর এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- কামাল উদ্দিন আহমেদ খানের বয়স ৯৬ বছর। মাতা- জাকিয়া আহমেদ খান’র বয়স ৮২ বছর। দু’জনই বর্তমানে জীবিত। তিনি চট্টগ্রাম খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি, চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচ.এস.সি এবং একটি প্রাইভেট বিশ^বিদ্যালয় থেকে ¯œাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ৪ এপ্রিল দক্ষিণ চট্টগ্রামের স্বনামধন্য মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মোস্তাক আহমদ চৌধুরী তখন সংসদ-সদস্য। এরপর থেকে কক্সবাজার জেলায় নিয়মিত যাতায়াত তাঁর।
পারিবারিক জীবনে মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ও কানিজ ফাতেমা আহমেদ দম্পতি দুই সন্তানের জনক-জননী। দুই জনই প্রবাসী। তাঁদের জ্যোষ্ঠ কন্যা তাজিন আহমেদ একজন চিকিৎসক। বসবাস করেন কানাডার টরেন্টো শহরে। একমাত্র পুত্র রাকিন আহমেদ চৌধুরী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ^বিদ্যালয় থেকে মেডিসিনে ¯œাতক ডিগ্রি অর্জনের পর সেখানেই পেশাগত জীবন বেছে নেন।
১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় মহিলা সংস্থা কক্সবাজারের সভানেত্রী নির্বাচিত হওয়ার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে নারীবান্ধব সামাজিক কর্মকা-ে সম্পৃক্ত হন তিনি। পরের বছর (১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ) নির্বাচিত হন কক্সবাজার জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। সেই ৫ বার কক্সবাজার জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত হন তিনি। বর্তমানেও সেই পদে বহাল রয়েছেন। বাংলাদেশ সমাজ কল্যাণ পরিষদের সদস্যও তিনি।
গতকাল এই প্রতিবেদকের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপকালে কানিজ ফাতেমা আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর আমার বিয়ের অনুষ্ঠানে আসার কথা থাকলেও তিনি আসতে পারেননি। বিয়ের এক সপ্তাহ পর স্বামীর সঙ্গে গণভবনে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। তখন তিনি আমাকে উপহার হিসেবে ২০ হাজার টাকা দিয়ে বলেন, ‘তুই আমার কক্সবাজারকে একটু দেখে রাখিস।’
দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মনোনয়ন না পেলে আমার স্বামী অনেক কষ্ট পেতেন। আল্লাহ্র কাছে শুকরিয়া। তিনি আমার সম্মান রক্ষা করেছেন। দেশবাসীর সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। তিনি কক্সবাজারবাসী এবং স্বামী মোস্তাক আহমেদ চৌধুরীকে মনোনয়ন উৎসর্গ করেছেন বলেও উচ্ছ্বাসের সুরে এই প্রতিবেদককে নিজ মনোভাব প্রকাশ করেন।
Posted ১:৪৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
dbncox.com | ajker deshbidesh