| বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২০
নির্বাণ পাল
সারাদেশ,সারা বিশ্ব প্লাষ্টিক পণ্যে ভরে গেছে। এসব প্লাষ্টিক পণ্য অপব্যবহার করে যত্রতত্র ফেলা হয়। আর এসব প্লাষ্টিক পণ্যের কারনে বিশ্ব আজ ভয়াবহ দূষণের কবলে পড়েছে। আর সেই প্লাষ্টিক পণ্য যত্রতত্র স্থান থেকে সরিয়ে পরিস্কার করার কাজটি করছেন পর্যটন নগরি কক্সবাজারের বাহার মিয়া। তিনি শহরের সমস্ত প্লাষ্টিক বজ্য সংগ্রহ করে একটি জায়গায় স্তুপ করে রাখেন। পরে এসব প্লাষ্টিক বজ্য বিক্রি করে দেয়া হয়। তিনি করছেন ব্যবসা, আর এই ব্যবসার কারনে হচ্ছে পরিবেশের সুরক্ষা।
কলাতলী মোড় থেকে হিমছড়ির দিকে অল্প একটু এগুলে কলাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর পাশেই খালি একটা মাঠে চোখে পড়বে রাশি রাশি প্লাস্টিকের বোতল স্তুপ করে রাখা আছে। প্রথম দেখাতে মনে হবে কোন সরকারি বেসরকারি পরিবেশবাদী সংস্থা পরিবেশ দুষণকারী প্লাস্টিকের বোতল সারা শহর থেকে খুঁজে এক জায়গায় রেখেছে। খবর নিয়ে জানা যায় এটা বাহার মিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কথা হয় মোঃ বাহার এর সাথে। হালকা পাতলা লোক। বয়স ৫৫। ফেনী দাগন ভুইঁয়ার লোক। যৌবনে টাকা পয়সা খরচ করে কুয়েত প্রবাসী হয়েছিলেন। সুবিধা করতে পারেননি। এক আত্মীয়ের সহায়তায় কক্সবাজার চলে আসেন। একাজ সেকাজ করতে একসময় পুরাতন প্লাস্টিকের বোতল বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন ২০০৩ সালে। ২০০৮ সালে তার এ ব্যবসার সাথে যুক্ত হয় কলাতলী মডার্ন হ্যাচারি এলাকার স্থানীয় যুবক ছৈয়দ আমিন। শুরুতে ভাল করতে পারেননি। আস্তে আস্তে ব্যবসা জমে উঠে। শহরের বড় বড় হোটেল গুলো বোতল জমা করে রাখে। তার লোক গিয়ে কিনে নিয়ে আসে। সীবীচে যে ৪৫ জন মহিলা কাজ করে তারা বোতল কুঁড়িয়ে নিয়ে তাদের এখানে বিক্রি করে। এছাড়া ৪০/৫০ জন শিশু কিশোর – কিশোরী শহরের অলিগলি ঘুরে ঘুরে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের বোতল খুঁজে খুঁজে প্রতিদিন নিয়ে আসে। আকার ও মান ভেদে ১৫-২০ টাকায় কিনে নেন তারা। প্রতিদিন ৩০০-৫০০ কেজি প্লাস্টিকের বোতল কিনেন তারা। এ বোতল গুলো পরিস্কার করে রোলারে চাপা দিয়ে প্রতি কেজি ২০-২৫ দরে কক্সবাজার বিসিক এ বিক্রি করেন তারা। ভাল মানের গুলো ৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। প্রতি মাসে ২-৫ টন বোতল বিক্রি হয়।
ব্যক্তি জীবনে সুখী মানুষ তিনি। তিন সন্তানের জনক। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলেকে দুবাই পাঠিয়েছেন। ছোট ছেলে দ্বাদশবর্ষ এ পড়াশোনা করে।
সরকারি বেসরকারি সহযোগিতা পেলে এ ব্যবসা আরো বড় করতে চান। প্রতি পাড়া মহল্লা থেকে প্লাস্টিকের বোতল খুঁজে আনতে চান তিনি। উনি অনুরোধ করেন শহরবাসী যেন বোতল যেখানে সেখানে না ফেলে । এক জায়গায় জমিয়ে রাখলে এবং নোংরা না করলে উনার লোক গিয়ে কিনে নিয়ে আসবে। কউক চাইলে পথের মোড়ে মোড়ে প্লাস্টিকের দ্রব্যের জন্য আলাদা বক্স বসাতে পারেন। তাহলে প্লাস্টিক কারনে পরিবেশ দুষিত হবেনা, আবার রিসাইকেলও করা যাবে।
কক্সবাজারে কত এনজিও পরিবেশ নিয়ে কাজ করে।কেউ কি এগিয়ে আসবে বাহার এর এ বাহারী ব্যবসায় সাহায্য করত। বাহারের ব্যবসা বাড়লে এ শহরের মাঠ -ঘাট পথ- প্রান্তর আর নালা -নর্দমা প্লাাস্টিকের বর্জ্যে ভরে উঠবে না।
Posted ১২:১৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২০
dbncox.com | ajker deshbidesh