নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ০৫ অক্টোবর ২০১৮
কক্সবাজার জেলাতেও শুরু হলো তিন দিনব্যাপী চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলা ২০১৮। দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে কক্সবাজারে শুরু হওয়া এবারের মেলা ব্যতিক্রম। উদ্বোধনী দিনেই তার প্রমাণ দিলো জেলা প্রশাসন। গতকাল সকালে উদ্বোধন উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজেছিলো কক্সবাজার শহর।
মেলা উপলক্ষে সকালে বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়েছিলো জেলাপ্রশাসক কার্যালয় চত্বরে। মেলা উপলক্ষে আয়োজিত র্যালিতে অংশগ্রহণ করতেই ছিলো তাদের আগমন। সকাল সাড়ে ৯ টায় জেলাপ্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন নীলিমার উদ্দেশ্যে শান্তির প্রতীক উড়িয়ে দিয়ে র্যালির শুভ সূচনা করেন। বিভিন্ন শ্রেণি, পেশার মানুষের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলো স্কুল, কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা। ঐতিহ্যবাহী টমটম যেমন র্যালির গাম্ভীর্যতা বাড়িয়েছে; তেমনি নানা রঙের বেলুন জুগিয়েছে র্যালিতে আগতদের আনন্দ।
র্যালিতে অংশগ্রহণকারিদের টি শার্ট আর মাথায় ক্যাপ দেয়া হয় আয়োজকদের পক্ষ থেকে। সবাই সারিবদ্ধভাবে হেঁটে পৌঁছেন মেলা প্রাঙ্গনে। কোন ধরনের বিশৃঙ্খলতা ছিলো না র্যালিতে। বিপুল মানুষের অংশগ্রহণে র্যালির আকার কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কক্সবাজার শহরের পশ্চিম অংশ স্থবির পড়েছিলো কিছু সময়ের জন্য। ফলে শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থানে দেখা যায় যানজট। তবে, এই যানজটে মোটেও বিরক্তি প্রকাশ করেননি সাধারণ মানুষ। বরং উপভোগ করেছেন। যাঁরা র্যালিতে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তাঁরাও দূর থেকে উপভোগ করেছেন র্যালির সৌন্দর্য।
৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় উন্নয়ন মেলা ২০১৮ এর উদ্বোধন করেন। মেলার উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আওয়ামী লীগ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে। ২০০৮ সালে দিন বদলের সনদ ঘোষণা করেছিলাম। ১০ বছরে এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন হয়েছে। দেশের ৯০ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎ পাচ্ছে। অথচ সামরিক এক নায়কেরা নিজেদের ছাড়া এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কোন কাজ করেনি।
দুই মেয়াদে সরকার পরিচালনাকালীন নিজেদের সফলতার চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন-“ দেশের উন্নয়নে ২১০০ সাল পর্যন্ত সময়ের জন্য ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশে বাস্তবায়নাধীন ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ব্যাপকহারে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।” ২০২১ সালে ক্ষুধা ও দরিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবে সুবর্ণজয়ন্তি পালন করবেন বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর উন্নয়নের অভিযাত্রায়, অদম্য বাংলাদেশ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মেলা প্রাঙ্গনে নির্মিত মঞ্চে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলাপ্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন। প্রধান অতিথির বক্তর্য রাখেন কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ-সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। সভায় অন্যান্যের মধ্যে পুুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে.কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ, ট্যুরিস্ট পুলিশের সুপার জিল্লূর রহমান, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবছার, জেলা জাসদ সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান কানিজ ফাতেমা আহমেদ প্রমুখ। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ-সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, “১০ বছর আগেও গ্রাম-গঞ্জে মানুষকে খালি গায়ে হাঁটতে দেখা যেতো। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ ছিলো না। বর্তমানে সেই অবস্থা পাল্টেছে। সব সূচকেই বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়ে। স্বাস্থ্য সূচকেও বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। পাকিস্তানের মতো দেশ এখন বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে হচ্ছে।”
সভাপতির বক্তব্যে জেলাপ্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন-“ পুরো বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়ে। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা ভবিষ্যতে ধারণ করবে নতুন প্রজন্ম।”
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের আগে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করে মেলা প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়। বর্ণাঢ্য ওই র্যালিতে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা ছাড়াও স্কুল, কলেজের বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রি অংশগ্রহণ করে।
দেশবিদেশ /৫ অক্টোবর ২০১৮/নেছার
Posted ১:৪৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৫ অক্টোবর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh