শফিক আজাদ,উখিয়া | শুক্রবার, ২০ জুলাই ২০১৮
সারাদেশ ব্যাপী মাদক বিরোধী অভিযানের মধ্যেও ইয়াবা পাচার অব্যাহত রয়েছে। সড়ক পথে কৌশল পাল্টিয়ে সাগর পথে ইয়াবা চালান পাচার হচ্ছে। সেই সাথে এলাকায় ফিরেছে চিহ্নিত ও প্রতিষ্টিত ব্যবসায়ীরা। ফিরেই আবারও সেই পুরনো ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিতে শুরু করেছেন তারা। প্রশাসনের এক শ্রেণির অসাদু ব্যক্তিকে ম্যানেজ করেই প্রকাশ্যে এসেছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে চলতি মাসে সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবির সদস্যরা কোটি টাকার ইয়াবা জব্দ করেছে। জানা গেছে, গত ২৫ মে সাবরাং ইউপির সদস্য আক্তার কামাল ও ২৭ মে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর ও সাবেক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. একরামুল হকসহ টেকনাফের চারজন ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হন।
সীমান্ত জনপথ উখিয়া-টেকনাফকে ইয়াবার ট্রানজিট বলা হলেও এসব ইয়াবার চালান সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশের অন্যান্য স্থানে ইয়াবা বেশি দামে বিক্রি হলেও উখিয়া-টেকনাফে তা কম দামেই মিলছে। মাদক ব্যবসায়ীরা এলাকায় এসে পুরোদমে মাদক পাচারে লিপ্ত হয়েছে। পান-সুপারি-লবণবোঝাই ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস ও ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ইয়াবা পাচার হচ্ছে এসব ইয়াবা। সীমান্তের নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে প্রতিদিন ছোট-বড় ইয়াবার চালান ধরা পড়ছে। তবে মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় মাদক পাচার বন্ধ হচ্ছে না। বাংলাদেশে চোরাই পথে ইয়াবা পাচারের জন্য মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকায় স্থাপিত কারখানায় ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। মিয়ানমারের কয়েকজন ডিলার ওই সব কারখানায় তৈরি করা প্রতিদিন গড়ে ৩০ লাখের বেশি ইয়াবা পৌঁছে দিচ্ছে এপারে ডিলারের কাছে।
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউনাইটেড ওয়া স্ট্রেইট আর্মির অধিনে বর্তমানে ১৩টি, কাসির ডিপ্ন্যাস আর্মির অধিনে ১০টি, পানসে ক্যা-ম্যা ইয়ন মলিয়ান গ্রুপের অধিনে ২টি, পুলিশ এক্স হলি ট্রেক গ্রুপের অধিনে ১টি, ম্যানটাং মিলেটিয়ার অধিনে ৩টি, ইয়ানজু গ্রুপের অধিনে ১টি, এসএনপিএলর অধিনে ৬টি, এমএনডিএ’র অধিনে ১টি ইয়াবা তৈরির কারখানা পরিচালিত হচ্ছে। গোপন সুত্রে ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন মাদক বিরোধী অভিযানের শুরুতে পালিয়ে আত্মগোপনে থাকা ইয়াবা ও মাদক গডফাদাররা এলাকা ফিরেছে।
এসব ইয়াবা কারবারীরা এলাকা ফিরে এখন আগের তুলনায় আরো বেশি আকারে পাচার কাজে জড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে এলাকায় ফিরে যারা ইয়াবা কারবার চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছে উখিয়ার টিএন্ডটি এলাকা খোকা, কুতুপালং এলাকায় জানে আলম জানু, নুরুল ইসলাম পুতিয়া, রোহিঙ্গা নাগরিক জিয়াবুল হক, সুশীল বড়–য়া, থাইংখালী সোহেল, পালংখালীর রাশেল, কানা মইন্না ও উখিয়ার পাশ^বর্তী রামু উপজেলার গোয়ালিয়াপালং এলাকার মোস্তাক আহমদসহ শতাধিক চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী।
এছাড়াও উখিয়ার শতাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ী মাদক বিরোধী অভিযানের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছে। এরা তাদের নিকট্মীয়স্বজনের মাধ্যমে এখনো ইয়াবা পাচার অব্যাহত রেখেছে। এ ব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বলেন, ইয়াবা ও মাদকের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেও তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
দেশবিদেশ /২০ জুলাই ২০১৮/নেছার
Posted ১০:৫১ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২০ জুলাই ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh