শফিক আজাদ,উখিয়া | রবিবার, ০৮ জুলাই ২০১৮
উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের গোরাইয়ারদ্বীপ এলাকা থেকে রেজু খালের মোহনা প্রায় দেড় কিলোমিটার দুরে অবস্থিত। বেড়িবাঁধ না থাকায় দক্ষিণ পাশে গোরাইয়ারদ্বীপ সিকদারপাড়া রেজুখালের স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় তিনটি গ্রাম। যার ফলে ওই গ্রামের অবস্থিত প্রায় ২০হাজারের অধিক জন সাধারণের দুঃখের কোন শেষ থাকেনা। স্থানীয় এলাকাবাসির দাবী গোরাইয়ারদ্বীপ হতে সিকদার পাড়া পর্যন্ত একটি বেড়িবাধ নির্মাণের। সরেজমিনে দেখা গেছে, একটি বাঁধের অভাবে রেজু খালের পানিতে গোরাইয়ারদ্বীপ হতে সিকদার পাড়ার বিভিন্ন অংশের পাড় ভেঙ্গে পড়েছে। পাড় ভেঙ্গে খালে পড়ে প্রতিনিয়ত খালের পরিধি বাড়ছে। হারিয়ে যাচ্ছে কৃষি ও ফসলি জমি। চিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া পুরানো ভিটে-বাড়ি। স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর ধরে রেজু খালের পাড় বিলিন হয়ে যাওয়ায় এলাকায় বসবাসকারি লোকজনের চিন্তার কোন শেষ নেই। রেজু খালের করাল গ্রাসে বিলিন হতে চলেছে মানুষের জায়গা জমি।
এপার ভাঙ্গে ওপার গড়ে। রেজু খালের ভাঙ্গা-গড়ার এই খেলায় শীঘ্রই মানুষের ঘর-বাড়ি বিলিন হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এখনই নতুন করে বাঁধ নির্মান করা না হলে মানুষের জান-মালের ব্যাপক ক্ষতির কথা জানিয়ে স্থানীয় গোরাইয়ারদ্বীপ এলাকার আলা উদ্দিন সিকদার বলেন, বাঁধ না থাকায় রেজু খালের দক্ষিণ পাশের গোরাইয়ারদ্বীপ, লম্বরিপাড়া ও গোয়ালিয়া পালং এলাকা ভুক্তভোগী কৃষক, জেলে, শ্রমজীবি ও সাধারণ খেটে-খাওয়া ২০ হাজার মানুষের কষ্টের কথা বলে শেষ করা যাবে না। তাই এলাকাবাসি বাঁধ নির্মানের জোর দাবি জানিয়েছেন। এখানকার অধিকাংশের পেশা মাছ ধরা ও কৃষিকাজ। এই মৌসুমের পূণির্মার জোয়ারে কৃষিজমির পাশাপাশি রেজু খালের পানি বাড়িঘরে প্রবেশ করে তলিয়ে যায় রান্নার চুলাও। সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে ভাঙ্গনের ভয়াবহতার চিত্র দেখা যায়। বেলাল উদ্দিন সিকদার বলেন, জোয়ারের পানিতে রেজু খালের পাড় বিলীন হয়ে যাওয়ায় ১২ মাস কৃষি কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা।
সাইফুল সিকদার ও সেলিম উদ্দিন সিকদার বলেন, স্থানীয় এমপি আব্দুর রহমান বদি এই এলাকায় বহুবার এসেছেন, তিনি এখানকার মানুষের সাথে মিশে গেছেন। আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের সু-দৃষ্টি কামনা করছি। নির্বাচনের আগে প্রত্যেক চেয়ারম্যান এই বাঁধসহ এলাকার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা কোনো কাজে আসেনি। এ বিষয়ে কথা হয় হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলমের সাথে। তিনি বলেন, ৪৭ বছর পর গোরাইয়ারদ্বীপ এলাকা বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। রাস্তাটির কার্পটিংয়ের কাজ শীঘ্রই শুরু করা হবে। রেজু খালের দক্ষিণ পাশে গোরাইয়ারদ্বীপ সিকদার পাড়া এলাকায় বাঁধ তৈরির ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডে(পাউবো) কাছে প্রস্তাবনা দেওয়া হবে। বরাদ্ধ পেলে কাজ শুরু করা হবে।
জাহাঙ্গীর আলম সিকদার বলেন, রেজু খালের জোয়ারের পানি উপচে আমাদের গ্রাম তলিয়ে যাচ্ছে। এসব গ্রামের কৃষকরা কৃষিকাজ করতে না পারায় বেকার হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় যুবকেরা গোরাইয়ারদ্বীপ এলাকায় চিংড়ি চাষের প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। এই মাছ চাষের চিংড়ি ঘের রেজু খালের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেলে যুবকদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে যাবে। ভালো কাজের এই দৃষ্টি নন্দন মাছ চাষের খামার গ্রামের সৌন্দযর্কে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই এই গ্রামের প্রতি জনপ্রতিনিধিদের আরো সু-নজর দেওয়া দরকার। দেশবিদেশ /০৮ জুলাই ২০১৮/নেছার
Posted ১০:৫০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৮ জুলাই ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh