সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও, | মঙ্গলবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৮
কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও ফুলেশ্বরী নদীর উপর দিয়ে নবনির্মিতব্য বাঁশঘাটা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এসটিএম রাজা মিয়া সেতু সংযোগ নির্মাণে চরম গাফেলতি ও নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। যার ফলে সেখানকার অর্ধ লক্ষাধিক জনগনকে পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ আর ভোগান্তি। অপরদিকে নদী পারাপারে অস্থায়ী নৌ-ঘাটে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, বিগত তিন বছর পুর্বে পাহাড়ী ঢলের পানিতে ধ্বসে পড়ে পুরাতন ব্রীজটি, পর্যায়েক্রমে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও এলাকার লোকজন তাৎক্ষণিক চলাচলের জন্য গাছের একটি সাকো তৈরী করেন। পরের বছর সেটিও ঢলের পানিতে ভেসে যায়। সবকিছু বিবেচনায় নতুন ব্রীজ নির্মানের জন্য ২ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা টেন্ডার দেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিআরডি)। টেন্ডারটি পান নোয়াখালী এলাকার একজন ঠিকাদার। তিনি কাজ সম্পাদনের লক্ষে কাজ শুরু করেন বিগত ১ বছর পুর্বে। নির্মিতব্য ব্রীজের ৩০% কাজও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যতটুকু হয়েছে সে কাজের গুনগত মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেন স্থানীয় সচেতন সমাজ। অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ব্রীজ নির্মাণে গাফেলতি করায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রোগী, শিক্ষার্থী, নারীদের এক কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে ঈদগাঁও বাজারে। আরকান সড়ক দিয়ে চলাচল করতেও আতংক বিরাজ করে।
স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, কক্সবাজারের সবচেয়ে এবং বানিজ্যিক নগরী ঈদগাঁওতে ব্যস্ততম এলাকার এই ব্রীজটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো এবং ব্যয়বহুল প্রতিদিন নৌকা করে পারপারের ঝুঁকিপূর্ণ। ইতিমধ্যে কয়েকটি দূর্ঘটনায় প্রাণহানির মত অবস্থা হয়েছে।
ঘাটের ইজারাদার আবু তাহের নামের এক ব্যক্তি বলেন, পথচারীদের সুবিধার জন্য নদী পারাপারে জন্য বসানো হয়েছে নৌকা। যেটি উপজেলা কার্যালয় থেকে টেন্ডার হয়েছে ৫ লক্ষ ১২ হাজার টাকা দিয়ে। এসময় জনপ্রতি ২ টাকা ৫০ পয়সা এবং আসা যাওয়া বাবদ ৫ করে নির্ধারণ করে দিলেও প্রশাসনকে বৃদ্ধ আঙ্গুলী দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে জনপ্রতি ৫ টাকা আসা যাওয়া ১০ টাকা করে। ছাত্র ছাত্রীদের বিনামূল্যে পারাপার করার নিয়ম থাকলেও তা মানছে না। তাছাড়াও এই ব্রীজের নির্মাণ কাজ এক বছর আগে থেকে শুরু হওয়ার পরও দৃশ্যমান কাজ শেষ না হওয়ায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থনীয়দের মাঝে। স্থানীয়রা ব্রীজের নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার পাশাপাশি নৌকা ভাড়া নির্ধারণের জোর দাবী জানিয়েছেন।
ইসলামাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান নুর ছিদ্দিক বলেন, যাতে ঠিকাদার দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করাচ্ছি। তবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে কোন অভিযোগ আসেনি আমার কাছে।
সাব-কন্ট্রাক্টর রবিউল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে কক্সবাজারস্থ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডির) নির্বাহী প্রকৌশলী মির্জা ইফতেখারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ওখানে তাদের অধীনে কোন ব্রীজ হচ্ছে না বলে জানায়।
ব্রীজ নির্মাণের ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে বৃষ্টির কারণে কাজ করতে একটু সমস্যা হয়েছিল। কাজ চলমান রয়েছে আগামী ৩/৪ মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গাডার গুলো স্থাপন করতে একটু সময় লাগে। ইতিমধ্যে ৪টি গাডার স্থাপন করা হয়েছে। বাকি গুলোর কাজ চলমান রয়েছে। ২/৩ মাসের মধ্যে ব্রীজের কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
Posted ১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh