দীপক শর্মা দীপু | বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৮
ইয়াবার টাকায় কক্সবাজারের ক্রীড়াঙ্গন নিয়ন্ত্রণকারী ইয়াবা গডফাদার শাহজাহান আনসারীর বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করতে পারেনি তারা।
বুধবার দুপুর ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত শহরতলীর বাসটার্মিনাল সংলগ্ন ঝিলংজা ইসলামপুর এলাকার বাড়িতে এই অভিযান চলে। এর আগে স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে ‘ইয়াবা গডফাদারের হাতে জিম্মি কক্সবাজারের ফুটবল অঙ্গন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের পর সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে তাকে ধরতে বাড়িতে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী।
অভিযানে যৌথ নেতৃত্বে দেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মুজিবুর রহমান, কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আদিবুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খোরশেদ আলম চৌধুরী।
এতে পুলিশ, র্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা ছিলেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, শাহজাহান আনসারী তালিকাভুক্ত ইয়াবা গডফাদার। তাকে গ্রেপ্তার করতে যৌথভাবে অভিযান চালানো হয়। একই সাথে তালিকাভুক্ত তার আরও তিন ভাই রশিদ আনসারী, কাশেম আনসারী ও সুফিয়ান আনসারীর বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়। কিন্তু বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দীন খন্দকার বলেন, শাহজাহান আনসারীসহ চার ভাইয়ের বাড়িতে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়। কিন্তু কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তাদেরকে গ্রেপ্তারে করতে নজরদারি করা হচ্ছে।
জানা গেছে, সরকারের পাঁচটি সংস্থার সমন্বয়ে তৈরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তালিকায় কক্সবাজারের ইয়াবা গডফাদারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারমধ্যে শাহজাহান আনসারী অন্যতম। সামান্য পরিবহন কর্মচারী থেকে ইয়াবা ব্যবসা করে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া আনসারীর কব্জায় জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। একজন তালিকা ভুক্ত ইয়াবা গডফাদারের কাছে জিম্মি হয়ে দিনদিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে কক্সবাজারের ফুটবল অঙ্গন। এছাড়া এই ইয়াবা গড়ফাদারের কথাই এখন জেলা ক্রীড়া সংস্থার আইন। সে স্বনামে বেনামে জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রায় ১ ডজন নিবন্ধিত টিম নিজের কব্জায় নিয়েছে। ডিএফএ’তে রয়েছে একই ভাবে তার পাঁচটি দল। সব মিলিয়ে ইয়াবার জোরে ধরাকে সরা জ্ঞান করা এই শাহ জাহান আনসারী এখন কক্সবাজার ক্রীড়াঙ্গনের এক মূর্তিমান আতংক।
এদিকে গতকাল ইয়াবা ডন শাহ জাহান আনসারী ও তার ইয়াবা কারবারী অপর তিন ভাইয়ের পৃথক আলিশান বাড়ীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানের খবরে স্টেডিয়াম কেন্দ্রিক তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের মাঝে ভীতি ও আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। সূত্র জানায়-অভিযানের খবর আগাম টের পেয়ে শাহজাহান আনসারী বেলা ১১টায় বিমান যোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ত্যাগ করে। এদিকে কক্সবাজারের সচেতন ক্রীড়াবোদ্ধাদের দাবি মূলতঃ ইয়াবার টাকায় কালো তালিকাভূক্ত শাহজাহান আনসারী নিজেকে সাদা করতে জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনকে বেছে নিয়েছে। তার ইয়াবার খপ্পরে পড়ে ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে কক্সবাজারের অনেক সম্ভাবনাময় ফুটবলার। কক্সবাজারের সচেতন মহলের জিঙ্গাসা-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের সময় দেশসেরা তালিকাভূক্ত এই ইয়াবা ডন শাহজাহান আনসারী প্রশাসনের নাকের ডগায় কক্সবাজার স্টেডিয়াম কার্যালয়কে সেকেন্ড হোম বানায় কেমনে?
Posted ১২:৪৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৮
dbncox.com | ajker deshbidesh