বুধবার ২৯শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম
* আগের আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল ২-১৫ বছরের দণ্ড * দশমিক ৫ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ই বিয়ার * মদদ বা পৃষ্ঠপোষকতা করলেও মৃত্যুদ-

ইয়াবায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

দেশবিদেশ অনলাইন ডেস্ক   |   মঙ্গলবার, ০৯ অক্টোবর ২০১৮

ইয়াবায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- রেখে নতুন ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এই অনুমোদনের কথা জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী ৫ গ্রামের বেশি ইয়াবা পরিবহন, মজুদ, বিপণন ও সেবনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-। আর ২৫ গ্রামের বেশি হেরোইন, কোকেনসহ সমজাতীয় মাদকদ্রব্যের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তিও মৃত্যুদ-। আগের আইনে মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল ২ থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড।
তবে খসড়া আইনটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ইয়াবা ‘ক’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য। এর রাসায়নিক নাম অ্যামফিটামিন। এই মাদকদ্রব্য চাষাবাদ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, বহন, পরিবহন, স্থানান্তর ও আমদানি-রফতানির পরিমাণ সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম হলে এক থেকে দুই বছরের কারাদ- ও অর্থদ-। মাদকদ্রব্যের পরিমাণ ১০০ গ্রামের বেশি থেকে ২০০ গ্রাম পর্যন্ত হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদ- এবং অর্থদ-। মাদকদ্রব্যের পরিমাণ ২০০ গ্রামের বেশি হলে মৃত্যুদ- বা যাবজ্জীবন কারাদ- ও অর্থদ-।
তবে সরবরাহ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, হস্তান্তর, অর্পণ, গ্রহণ, প্রেরণ, লেনদেন, নিলামকরণ, ধারণ, অধিকার অথবা গুদামজাতকরণ ও প্রদর্শনের ক্ষেত্রে ওই মাদকের পরিমাণ সর্বোচ্চ ২০০ গ্রাম হলে এক থেকে দুই বছরের কারাদ- ও অর্থদ-। মাদকদ্রব্যের পরিমাণ ২০০ গ্রামের বেশি থেকে ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদ- এবং অর্থদ-। মাদকদ্রব্যের পরিমাণ ৪০০ গ্রামের বেশি হলে মৃত্যুদ- বা যাবজ্জীবন কারাদ- ও অর্থদ- হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি, কোনো প্রতিষ্ঠান এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ সংঘটনে অর্থ বিনিয়োগ ও সরবরাহ করলে, মদদ দিলে বা পৃষ্ঠপোষকতা করলে মৃত্যুদ- ও অর্থদ-ের সাজা পাবেন। একইসঙ্গে কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটনে কাউকে প্ররোচনা দিলে, সাহায্য করলে বা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে, প্রচেষ্টা নিলে অপরাধ সংঘটন হোক বা না হোক তিনি এই আইনের অধীন অনুরূপ দণ্ডে দন্নীয় হবেন।’
শফিউল আলম বলেন, ‘হেরোইন, কোকেন মাদকদ্রব্যের পরিমাণ অনূর্ধ্ব ২৫ গ্রাম হলে কমপক্ষে ২ বছর এবং সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড। আর মাদকদ্রব্যের পরিমাণ ২৫ গ্রামের বেশি হলে মৃত্যুদ- বা যাবজ্জীবন কারাদ-। পরিবহন, ব্যবসা, সংরক্ষণ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ- এগুলো সবগুলো এর মধ্যে চলে আসে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আগের আইনটি ১৯৯০ সালে প্রণয়ন করা হয়। এটাকে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে পুর্নবিন্যাস করা হয়েছে। বাংলাদেশ সিঙ্গেল কনভেনশন অন নারকোটিকস ড্রাগস-১৯৬১, ইউএন কনভেনশন অন সাইকো ট্রপিক সাবসটেন্সস-১৯৭১ এবং ইউএন কনভেনশন অন নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকো ট্রপিক সাবসটেন্সস ১৯১৮ এ সই করেছে। এগুলোর ভিত্তিতে আইনটি হালনাগাদ করা হয়েছে।’
আগের আইনে অনেক বিষয় সরাসরি পরিষ্কার করা নেই উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘নতুন আইনে ইয়াবা, সিসাবার, ডোপ টেস্টের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে সব ধরনের মাদককে নতুন আইনে যুক্ত করা হয়েছে। এমন কোনো বিষয় নেই যা আইনে কাভার করবে না। কোনো না কোনোভাবে তালিকার মধ্যে চলে আসবে।’
ইন্টারন্যাশনাল নারকোটিক্স কন্ট্রোল বোর্ডের নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রস্তাবিত আইনে ‘কন্ট্রোল-ডেলিভারি’ নামে নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এতে বিয়ারের সংজ্ঞা হালনাগাদ করা হয়েছে। প্রস্তুতকৃত দশমিক ৫ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়কে বিয়ার বলা হবে।’
‘মাদকদ্রব্যের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, এই আইনের তফসিলে উল্লিখিত কোন দ্রব্য এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা মাদকদ্রব্য বলে ঘোষিত অন্য কোনো দ্রব্য যা সংশ্লিষ্ট তফসিলের অংশ বলে গণ্য হবে। মাদকদ্রব্যের সঙ্গে অন্য যে কোনো দ্রব্য মিশ্রিত বা একীভূত দ্রব্য সমুদয় পণ্য মাদকদ্রব্য বলে গণ্য হবে’ বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, ‘সিসার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, বিভিন্ন ধরনের ভেষজ-নির্যাস সহযোগে দশমিক ২ শতাংশের ঊর্ধ্বে নিকোটিন এবং এসএস ক্যানেল মিশ্রিত উপাদান।’
শফিউল আলম বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী কেউ যদি বার চালাতে চায় তার লাইসেন্স লাগবে। লাইসেন্স ছাড়া যদি কেউ বার চালায় তার জন্য শাস্তির বিধান আছে। অনূর্ধ্ব এক লাখ টাকা আদায় করে শর্ত পূরণ পূর্বক লাইসেন্স দেয়া হবে।’
‘মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে শনাক্তকরণে বিধি দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে ডোপ টেস্ট করা যাবে। টেস্ট পজিটিভ হলে কমপক্ষে ছয় মাস ও সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদ- দেয়া হবে।’

Comments

comments

Posted ১:১৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৯ অক্টোবর ২০১৮

dbncox.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

প্রকাশক
তাহা ইয়াহিয়া
সম্পাদক
মোঃ আয়ুবুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়
প্রকাশক কর্তৃক প্রকাশিত এবং দেশবিদেশ অফসেট প্রিন্টার্স, শহীদ সরণী (শহীদ মিনারের বিপরীতে) কক্সবাজার থেকে মুদ্রিত
ফোন ও ফ্যাক্স
০৩৪১-৬৪১৮৮
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন
01870-646060
Email
ajkerdeshbidesh@yahoo.com