শফিক আজাদ,উখিয়া | সোমবার, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯
ইয়াবা অনুপ্রবেশের ঘাটি নামের খ্যাত কক্সবাজার জেলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক কারবারিরা আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন। স্বেচ্ছায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আগ্রহী এই ইয়াবা কারবারীদের ডাকে সাড়া দিয়েছে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহল।
দীর্ঘদিন এ ব্যবসা থেকে অর্জন করা অর্থের মায়া ভুলে প্রায় ১২০-১৫০ জন ইয়াবা কারবারি স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
আত্মসমর্পণের অপেক্ষায় থাকা এসব ইয়াাবা কারবারিদের মধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়াও সংশ্লিষ্ট জেলার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করা তালিকায় ৭৩ জন মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে কমপক্ষে ৫০ জন রয়েছেন। তাছাড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সর্বশেষ করা ইয়াবা ব্যবসায়ীর তালিকার ১ হাজার ১৫১ জনের মধ্যে এরা সবাই আছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, প্রায় ১৫০ জনের মতো দেশি-বিদেশী ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ বিষয়টি নিয়ে ১ মাস ধরে কাজ করছেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল।
পুলিশ জানায়, মূলত সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পুলিশ প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নে জন্য হাত দেন।
পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, ইতিমধ্যে আত্মসমর্পণ করতে ইচ্ছুক ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশের হেফাজতে চলে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের চট্টগ্রাম অফিসের প্রতিবেদক এম এম আকরাম হোসেনের মধ্যস্থতায় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন এই ইযাবা ব্যবসায়ীরা।
এবিষয়ে এম এম আকরাম হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, গত ২০ অক্টোবর আমার মধ্যস্থতায় র্যাবের সহযোগিতায় কক্সবাজারের মহেশখালীর ৫টি জলদস্যু বাহিনীর ৩৭ জন সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন করে এই ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণের প্রক্রিয়াটির কাজ করছি।
এদিকে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাদক ব্যবসায়ীদের মাদক বিক্রির অর্থ বাজেয়াপ্ত করবে সরকার। প্রথমে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর) কর্তৃপক্ষ আত্মসমর্পণ করা এই কারবারিদের সম্পদের তদন্ত করবে। তদন্তের পর ইয়াবা ব্যবসা থেকে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করবে তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত এক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, খুব শীঘ্রই আত্মসমর্পণের অনুষ্ঠানটি হতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের প্রথম দিকেই আত্মসমর্পণে আসতে পারে মাদক কারবারিরা।
এদিকে গতবছর ৪ মে দেশব্যাপী শুরু হওয়া মাদকবিরোধী অভিযানে এ পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় ৩৫ জন মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে শুধু টেকনাফেই নিহত হয়েছেন ৩২ জন।
Posted ১:৩২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯
dbncox.com | ajker deshbidesh